মাইক্রোফোন ও স্পিকার

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - সবাই কাছাকাছি | | NCTB BOOK

১৩.২.১ মাইক্রোফোন
কোনো সভা বা অনুষ্ঠানে বক্তারা যে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলেন তাকে মাইক্রোফোন বলে। মাইক্রোফোন বক্তার কন্ঠস্বরকে বিদ্যুৎ সংকেত বা তড়িৎ সংকেতে রূপান্তর করে। সেই বিদ্যুৎ সংকেতকে এমপ্লিফায়ার দিয়ে বাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং স্পিকারে পাঠানো হয়। স্পিকার সেটাকে শব্দে রূপান্তর করে এবং শ্রোতারা লাউড স্পিকারে জোরে শুনতে পান। তোমরা যখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করো তখন বাইরে থেকে দেখা না গেলেও তোমরা আসলে মোবাইল ফোনের মাইক্রোফোনে কথা বল এবং স্পিকারে শুনতে পাও।

মাইক্রোফোনের কার্যক্রম দৈনন্দিন কিংবা বিশেষ কাজে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের মাইক্রোফোন রয়েছে, ১৩.০৩ চিত্রে সেরকম সাধারণ একটি মাইক্রোফোনের গঠন দেখানো হলো। এই মাইক্রোফোনের সামনে ধাতুর একটি পাতলা পাত বা ডায়াফ্রাম  থাকে ।ডায়াফ্রামের সাথে একটা চলকুণ্ডলী (Coil) লাগানো থাকে যেটি ছবিতে দেখানো উপায়ে একটা চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের ভেতর নাড়া চড়া করতে পারে। যখন কেউ এই মাইক্রোফোনের সামনে কথা বলে তখন ডায়াফ্রামটি শব্দ তরঙ্গের কম্পনের সাথে কাঁপতে থাকে। ডায়াফ্রামের সাথে লাগানো চলকুণ্ডলীটিও চৌম্বক ক্ষেত্রে সামনে পিছনে নড়তে থাকে। চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি চলকুণ্ডলী নাড়াচড়া করলে সেখানে একটি বিদ্যুৎ শক্তির আবেশ হয়, কাজেই মাইক্রোফোনটি শব্দ-শক্তিটিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করে একটি বৈদ্যুতিক সিগন্যাল পাঠায়।শব্দের এই বৈদ্যুতিক সিগন্যাল বা সিগন্যাল শব্দের নিখুঁত উপস্থাপন হলেও এর মান খুবই কম থাকে তাই তাকে ব্যবহার করার জন্য এমপ্লিফায়ারে বাড়িয়ে নিতে হয়। তারপর সেটি শুধু স্পিকারে নয়, টেলিফোন লাইনে, রেডিও সম্প্রচারে বা রেকর্ডিংয়ে ব্যবহার করা যায়।


১৩.২.২ স্পিকার

স্পিকার মাইক্রোফোনের ঠিক বিপরীত কাজটি করে অর্থাৎ বিদ্যুৎ শক্তিটিকে শব্দের রূপান্তর করে। ১৩.০৪ চিত্রে একটি স্পিকারের গঠন দেখানো হলো, মাইক্রোফোনের ডায়াফ্রামের বদলে স্পিকারে চলকুণ্ডলী বা Coll টি কাগজ বা হালকা ধাতুর তৈরি একটি কোন (Cone) বা শঙ্কুর সাথে লাগানো থাকে। যখন শব্দ থেকে তৈরি বৈদ্যুতিক সিগন্যালকে এমপ্লিফায়ার দিয়ে বিবর্ধিত করে স্পিকারে পাঠানো হয়, তখন কাগজ বা হালকা ধাতুর তৈরি কোনটি সামনে পিছনে কম্পিত হয়ে যথাযথ শব্দ তৈরি করে।

 

Content added || updated By
Promotion